ওয়ালিউর রহমান

পাকিস্তান সরকারের চাকরি ছেড়ে সুইজারল্যান্ড, জেনেভাতে আমি এবং শাহরুখ রেফিউজি হিসেবে ছিলাম। ১৬ ডিসেম্বরের রাতভর আনন্দ উৎসবের দুইদিন পর ১৪ ডিসেম্বরে আমাদের বুদ্ধিজীবীদের নৃশংস হত্যার খবর ভেসে আসলো আমাদের কানে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা কিছু পরিচিত বন্ধুবান্ধবদের ডাকলাম। বেশির ভাগ ছিলেন সুইস, কয়েকজন বাঙালি, তাদের মধ্যে একজন ছিলেন ব্যাংকার, প্রয়াত জনাব নূর, সঙ্গে ছিলেন জনাব খান মজলিশ, তিনি এখনও জীবিত আছেন, বর্তমানে তিনি বসেলে থাকেন। আর আমার এক আলজেরিয়ান বন্ধু ছিলেন তাকেও ডাকলাম, একজন ফরাসি বন্ধুকে ডাকলাম। সবার কাছ থেকে আমি মতামত চাইলাম। আলজেরিয়ান বন্ধু বললেন, ফরাসিরা যখন ওদের ঔপনিবেশিকতার পরাকাষ্ঠা দেখাচ্ছে তখন আলজেরিয়ার অনেক বুদ্ধিজীবীকে তারা একইভাবে হত্যা  করেছে। তিউনেশিয়াতেও ঠিক একই অবস্থা হয়েছিলো। আবার ঠরপযু সরকারের সময় জার্মানরা হত্যা করলো ফরাসি রেসিস্ট্যান্স সদস্যদের। আর জার্মানিতে নাৎসিরা খুন করলো ইহুদী বুদ্ধিজীবীদের যাদের মধ্যে ছিলেন ডাক্তার, শিক্ষক, লেখক, বিজ্ঞানী। 

ঝপযরহফষবৎং ষরংঃ সাহায্য করে আমাদের। সাড়া বাংলাদেশে যে জঘন্য হত্যকাণ্ড ঘটিয়েছিলো, শত থেকে হাজার, আমরা তাঁর সঠিক লিস্ট এখনও পাইনি। রাও ফরমান আলী এবং তাঁর সঙ্গে তার দুজন সহচর, রাজাকার এবং সহায়ক চৌধুরী মইনুদ্দীন এবং আশরাফ উদ্দীন, এরা যা করেছে তা ইতিহাসেরই একটি অঙ্গ। আজকে আলজেরিয়া, তিউনেশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি যেভাবে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ, বাঙালি জাতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলাদেশ, তার কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে ঠিক একই ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এই গতিকে কেউ ঠেকাতে পারেনি, পারবে না, অপ্রতিরোধ্য। আমরা গর্বিত জাতি, আমরা স্বপ্ন দেখেছি, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। সেই স্বপ্নের  মাধ্যমে আমরা আজকের ২৮২৪ ডলার মাথাপিছু আয়ের মধ্য দিয়ে এবং আগামী ৭ বছরে আমরা হবো ৫০০০ ডলার, ২০৪১ সালে আমরা হবো উন্নত দেশ। এটা জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন এবং আজকের দিনে সেই স্বপ্নের সাথে আমরা একাত্মতাবোধ করছি। লেখক: সাবেক রাষ্ট্রদূত